শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
গোদাগাড়ীর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ নির্বাচনী প্রচারণায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রাজশাহীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের এক সদস্য প্রার্থী।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর জেলার গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের কদমহাজির মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর রাতেই গোদাগাড়ী মডেল থানায় অভিযোগ নিয়ে যান প্রার্থী নূরুজ্জামান নূরু (৪৪)। তার অভিযোগ, পুলিশ সেই অভিযোগ না নিয়ে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। পরে ঘটনাটি তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানান।
নূরুজ্জামান নূরু মাটিকাটা ইউনিয়নের ভাটোপাড়া এলাকার মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তিনি। আগামী ১১ নভেম্বর এই ইউনিয়নে ভোট। এ নির্বাচনেও টিউবওয়েল প্রতীকে অংশ নিয়েছেন নূরুজ্জামান।
তার অভিযোগ, নির্বাচনে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী (মোরগ প্রতীক) ফারুক সরকার সিজারের (৩৫) নির্দেশে তার লোকজন পদে পদে প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হুমকি দিচ্ছে তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নির্বাচনী এলাকার কদমহাজির মোড়ে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
এ সময় সিজারের নির্দেশে মোমিনুল ইসলাম (৬৫), সায়েদ সরকার (৬৫), মোস্তাফিজুর রহমান মাবুদ (৪৫), রোকন সরকার (৩৫), মানিক সরকার (৩৮), সাইদুর রহমান (৫৫), বাহাদুর (৫৫), রেজাউল করিমসহ (৫০) অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেন। এক পর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান মাবুদ তার বুকে পিস্তল ঠেকান। নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হত্যার হুমকি দেন তাকে। এই ঘটনার পর তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ প্রার্থীর অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তিনি থানায় অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওসি সেই অভিযোগ গ্রহণ করেননি। এমনকি সাধারণ ডায়েরিও করতে পারেননি তিনি। পরে বিষয়টি তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানান।
তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফারুক সরকার সিজার। তিনি বলেন, নূরুজ্জামানের সঙ্গে মাবুদের আগে থেকেই বিরোধ ছিল। এ নিয়েই কয়েক দিন আগে কথা কাটাকাটি হয়। সেখানে পিস্তল ঠেকানোর মতো ঘটনা ঘটেনি।
নূরুজ্জামানের বিরুদ্ধে পাল্টা মাইক ভাঙচুর ও গাড়িতে হামলার অভিযোগ আনেন সিজার।
তবে নুরুজ্জামানের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই বলে দাবি করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান মাবুদ। তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে মাইকে সিজারের প্রচারণা চলছিল। সেখানে প্রচার মাইক ভাঙচুর করে নূরুজ্জামানের লোকজন। খবর পেয়ে আমি লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে কেবল দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। অস্ত্র ঠেকানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।
গোদাগাড়ী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, যেহেতু বিষয়টি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট, সেহেতু ওই প্রার্থীকে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে প্রচারণা চলাকালে দুই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা মুখোমুখি চলে আসায় সামান্য উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার প্রমাণ মেলেনি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দুই প্রার্থীকে রোববার শুনানির জন্য ডাকা হয়েছে। আচরণবিধি ভঙ্গের প্রমাণ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।